যুদ্ধরাজনীতি

দ্যাটস এক্সট্রিমলি জিনিয়াস আইডিয়া

লেবানন জুড়ে পেজার ডিভাইস এক্সপ্লোড হওয়ার নিউজ আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এই এক্সপ্লোশনে মো সা দে র সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছে। যাইহোক, সেটা তর্ক বিতর্কের বিষয় তাই ওই প্রসঙ্গে না গিয়ে সম্ভাব্য কোন উপায়ে এক্সপ্লোশন ঘটেছে তা নিয়ে দুয়েকটা কথা বলি

প্রথমত, অনেকের ভুল ধারনা AR-924 পেজার ডিভাইসটি তাইওয়ানের তৈরি। এটা কিন্তু তাইওয়ান অরিজিন নয়। তাইওয়ানিজ কোম্পানি গোল্ড এপোলো লাইসেন্স নিয়ে তৈরি করে এবং মেইন ম্যানুফেকচারার হলো হাঙ্গেরিয়ান কোম্পানি BAC; যেটি রাজধানী বুদাপেস্টে অবস্থিত। BAC এর পক্ষ থেকে গোল্ড এপোলোকে এই ডিভাইস গুলো কাস্টমাইজ করার এক্সেস দেওয়া ছিল।

দ্বিতীয়ত, এক্সপ্লোশনের জন্য এক্সপার্টরা লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিকে দুষছেন, এবং এটা আসলেই এক্সপ্লোশনের সম্ভাব্য কারন হতে পারে।

লিথিয়াম ব্যাটারির কথা যখন বললাম, তখন আরেকটু ইনফরমেশন দেই যে- হাঙ্গেরিয়ান কোম্পানি BAC যে এআর-৯২৪ ডিভাইস তৈরি করত সেখানে শুধুমাত্র ট্রিপল-এ (AAA-cell) ব্যবহার করা হত। কারন এআর-৯২৪ এর মত স্মল ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ১.৫ ভোল্টের রিচার্জেবল ট্রিপল-এ ব্যাটারি যথেষ্ট। লিথিয়ামের মত ব্যাকআপ ব্যাটারির খুব একটা প্রয়োজন পড়েনা।

কিন্তু কাস্টমাইজেশনের এক্সেস রাখা তাইওয়ানিজ কম্পানি ট্রিপল-এ ব্যাটারির সাথে লিথিয়ামের মত এক্সপ্লোসিভ হ্যাজার্ড ব্যাকআপ হিসেবে রেখে তৈরি করে।

আপনারা নিশ্চয়ই বিস্ফোরিত ডিভাইস দেখে বুঝেছেন, লিথিয়াম ব্যাটারি ওভারহিট হয়েই এক্সপ্লোশন ঘটেছে।

কিন্তু এই লিথিয়াম ব্যাটারি ওভারহিট হলো কিভাবে?

এটা জানার জন্য আপনাকে একটু কষ্ট করে ফ্লাইট রাডারে ঘটনার দিনকার লেবাননের এয়ারস্পেসের কাছের ফ্লাইট গুলো অবজার্ভ করতে হবে।

আমি খোঁজ নিয়ে দেখলাম, ঘটনার দিন লেবাননের আশেপাশে দুই থেকে তিনটি EC-37 এবং EC-130 ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার জ্যমার এয়ারক্রাফট উড়ছিল। এনক্রিপ্টেড ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল পাঠানোর মাধ্যমে শত্রুপক্ষের কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সিস্টেম জ্যাম করে দেওয়ার জন্যই এই বিমান গুলো স্পেশালাইজড।

সুতরাং, এমনটা হতেই পারে যে- এই বিমানগুলো থেকে পাঠানো এনক্রিপ্টেড ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল ব্যাকডোর ম্যাকানিজম হিসেবে কাজ করেছে ডিভাইসের ব্যাকআপ ব্যাটারি লিথিয়ামকে ট্রিগার করতে। যেহেতু লিথিয়াম খুব এক্সপ্লোসিভ হ্যাজার্ড, তাই খুব দ্রুত ওভারহিট হয়ে গিয়েছিল এবং ব্যাকডোর মেকানিজম হিসেবে কাজ করতে থাকা সিগন্যালের কারনে ডিভাইসের ব্যাটারি ফেইলিওর দেখা দেয়। অতঃপর লিথিয়াম প্রায় এগারশ ডিগ্রি ফারেনহাইট অর্থাৎ ছয়শ ডিগ্রি সেলসিয়াম তাপমাত্রায় মেইন ব্যাটারি ট্রিপল-এ’কে সাথে নিয়ে এক্সপ্লোড হয়।

কাজটা কে বা কারা করেছে জানিনা। তবে যেই করুক ‘দ্যাটস এক্সট্রিমলি জিনিয়াস আইডিয়া’

লেখকের ফেসবুক পোস্ট

Hi, I’m শাফিন রহমান

Leave a Reply