স্নাইপিং, জুলাই রেভ্যুলিউশন এবং মাইডেন ক্যাজুয়েলটিস
রাশান স্পেশাল ফোর্স ‘স্পেটনাজ’ এর আলফা গ্রূপের ফর্মার স্নাইপার এক্সপার্ট Mareo Voroliev বলেন- “একজন রেগুলার শুটার কখনোই ক্লোজ কোয়ার্টার রেঞ্জে টার্গেটের হেডশট নেয়না। অর্থাৎ মাথা, চোখ বা গলায় গুলি করে না। কারন এটা ‘আউট অব প্রফেশনালিজম’। ক্লোজ রেঞ্জে হেডশট নেওয়া হয় মূলত মৃত্যু নিশ্চিত করতে এবং এই কাজটা করে থাকে মার্সেনারী, স্লিপার কন্ট্রাক্টর বা আন্ডারকভার অপারেটিভরা”
মাইডেন ক্যাজুয়েলটিস:
ইউরোমাইডেন হলো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পার্লামেন্ট ভবনের অদূরে অবস্থিত একটি বিশেষ জায়গা, যেখানে ২০১৪ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। যা শুরু হয় মূলত ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকেই।
আপনারা সবাই জানেন,২০১৪ সালে ইউক্রেনে রুশপন্থী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কলকাঠি নেড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। যদি মাস্টারমাইন্ডদের নাম বলি সেক্ষেত্রে সামনে চলে আসে- ভিক্টরিয়া ন্যুল্যান্ড, হান্টার বাইডেন, জো বাইডেন, ব্লিনকেন প্রমুখ।
ইউক্রেনের মাইডেন স্কয়ারে সংগঠিত ঘটনার কথা আপনাদেরকে বলার একমাত্র কারণও ‘স্নাইপিং’। যাতে করে আপনারা বুঝতে পারেন স্নাইপিং প্রসিডিওরটা কেনো এত ইম্পরট্যান্ট রোল প্লে করে এবং এটার একচুয়ালাইজেশন কিভাবে ঘটে….
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, মাইডেন স্কয়ার, কিয়েভ, ইউক্রেন
১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুলিশ এবং সরকার বিরোধী- দুই পক্ষেরই মানুষ মারা যেতে থাকে, যেটা কিনা গত আন্দোলনের দিন গুলোতে হয়নি। এতদিন যাবৎ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, পিপার স্প্রে, জলকামান’ই ব্যবহার করে আসছিল রায়ট পুলিশ। কিন্তু আঠারো তারিখ থেকে উভয় পক্ষের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মারা যেতে শুরু করে। পুলিশ ভাবতে শুরু করে প্রটেস্টররা লাইভ এমিউশন ইউজ করছে আবার প্রটেস্টররা ভাবে পুলিশও একই কাজ করছে। অর্থাৎ দুপক্ষই ট্রিগারড হয়ে পড়ে। এরপর পুলিশ আসলেই লিথাল এমিউনিশন ইউজ শুরু করে। এতে করে সরকার বিরোধী প্রটেস্টররা প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ হয় এবং তারাও ব্রেক ব্যারেল এয়ারগান এবং বিভিন্ন মডেলের হান্টিং রাইফেল নিয়ে নেমে পড়ে।
২০ তারিখ থেকে একটানা গান ফাইটে প্রায় ৭৬ জন আন্দোলনকারী মারা যায়। তখনও পর্যন্ত কেউ জানত না এখানে কেবলমাত্র দুই পক্ষ নয়, তৃতীয় পক্ষও আছে। যেটা সামনে আসে বেশ কিছুদিন পর।
ঝামেলার পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মাইডেন স্কয়ার সংলগ্ন বিভিন্ন হোটেল, যেমন- হোটেল ইউক্রেন, হোটেল দিনিপ্ৰ, হোটেল গ্রান্ডস্কাই থেকে ল’এনফোর্সমেন্ট টিম বিভিন্ন আরমামেন্টস ক্যাপ্টিভ করে। উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু ব্র্যান্ড নিউ স্নাইপার রাইফেলের হলস্টার্স। যেগুলোকে আবার ল এনফোর্সমেন্ট টিম মিডিয়ার সামনে মিউজিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট বলে আখ্যায়িত করে। কিন্তু মানুষের মনে সন্দেহের বীজ বোনা হয়ে যায় তখনই। কারন গান ফাইটের সময় হোটেল এরিয়া ছিল আন্দোলনকারীদের সাইডে, আর পুলিশ ফোর্স ছিল তার ঠিক অপোজিটে পার্লামেন্ট বিল্ডিং সুরক্ষায়। তাহলে হোটেলে স্নাইপার রাইফেল আসবে কোত্থেকে?
শুরু হয় ইনভেস্টিগেশন। ১০০ জন জারনালিস্টের থেকে প্রায় ৫০০০ পিকচার, ১৫০০ ভিডিও, রায়ট পুলিশের স্নাইপার ইউনিটের মধ্যকার রেডিও এনক্রিপ্টেড কনভারসেশন এর ইন্টারসেপ্ট হওয়া ডেটা সহ প্রায় ১৩০ গিগাবাইটের বিশাল ডেটা নিয়ে রিসার্চ করা হয়। সেই রিসার্চে বের হয়ে আসে হোটেল দিনিপ্ৰ’র বেলকনিতে ছিল তিনজন স্নাইপার; তারাই মূলত আন্দোলনকারীদের উপর ম্যাস কিলিং চালিয়েছে। তবে শুধুমাত্রই যে তারা সব করেছে তাই নয়, তারা ছিল ট্রিগারার, অর্থাৎ উস্কানিদাতা।
২০২০ সালে বের হওয়া এক রিপোর্টে জানা যায়, ওই স্নাইপাররা ছিল ন্যাটো কন্ট্রাক্টর।
জুলাই রেভ্যুলিউশন:
জুলাই আগস্টের বিপ্লবে যে পরিমান ব্ল্যাডশেড হয়েছে, সেটার ইনভেস্টিগেশনের সুবিধার্থে আমি স্নাইপিংকে সিগনিফিকেন্টলি ফিগার আউট করতে চাই। কিন্তু কেনো?
কারন স্নাইপিং ইস্যুটাকে ধরতে পারলে অনেক কিছুর জটলা খুলে যাবে। এমন এমন রাঘব বোয়াল বের হবে যাদেরকে আপনারা কিলার হিসেবে কল্পনাতেও আনতে পারেননাই।
আমি পার্সোনালি মাল্টিপল উইথনেস এবং সোর্স কর্তৃক ভেরিফাইড যে, বহু মানুষ মিছিলের ভেতরেই স্যাবটেজের শিকার হয়েছে। ঘাড়ের পেছনে, পি ঠ ভেদ থেকে বু ক চিরে বের হয়ে যাওয়া ভিক্টিমও দেখেছি―এই মৃত্যু গুলো অস্বাভাবিক।
যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, উত্তরা, রামপুরায় রাতের আধারেও স্নাইপার ব্যবহার হয়েছে এবং যেনতেন বুলেট না। সুপারসনিক বুলেট উইথ সাপ্রেসর। সাপ্রেসর এবং সাইলেন্সর কিন্তু এক জিনিস নয়। সাপ্রেসর প্রায় ১৩০ ডেসিবল সাউন্ড রিডিউস করে। পুলিশ র্যাব এগুলো পাবেনা। অর্থাৎ, ২০১৪ এর ইউক্রেন প্যাটার্ন এপ্লাই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই কাজটি যারা করেছে তারা শুধুই লা শ চেয়েছে। যত বেশি লাশ, তত বেশি লাভ।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম হিন্দি ভাষাভাষী মানুষের ইনভলবমেন্টের কথা বলেছেন। তাকে এই বিষয়টিও দেখতে হবে। প্রয়োজনে নন বায়াসড স্পেশালিস্টদের নিয়ে ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি করতে হবে। স্নাইপার এক্সপার্ট, ফরেনসিক সাইন্স এন্ড ক্রিমিনোলজি স্পেশালিস্টদের সমন্বয় করে এমন টিম তৈরি করতে হবে যারা প্রাইমারি শক ওয়েব, বো এন্ড সেকেন্ডারি শক ওয়েব সহ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়াদি খতিয়ে দেখে এই বিষয়টার সমাধান দেবেন।
শুধু ছাত্র নয়, আমরা সেই রিকশা চালক থেকে শুরু করে ফ্ল্যাটের বেলকনিতে খেলতে থাকা ছোট্ট মেয়েটিরও প্রতি ফোঁটা র ক্তে র হিসাব চাই।