যুদ্ধরাজনীতিসমসাময়িক

U.S. Marine Corps এর Military Police (MP) গত পরশুদিন জাপানের ওকিঁনাওয়া প্রিফেকচারের রাজধানী শহরে সশস্ত্র টহল পরিচালনা করেছে।

U.S. Marine Corps এর Military Police (MP) গত পরশুদিন জাপানের ওকিঁনাওয়া প্রিফেকচারের রাজধানী শহরে সশস্ত্র টহল পরিচালনা করেছে।

U.S. Indo-Pacific Command এর শক্তিশালী ঘাঁটি ওকিনাওয়ার মাটিতে সশস্ত্র মার্কিন মিলিটারি পুলিশের টহল তখন হতে সমগ্র জাপানে দারুণ কৌতূহল ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। টহলের পেছনের কারণের ফলে বিষয়টি ক্রমাগত ধীরগতিতে আরো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে মর্মে শঙ্কাও করছেন অনেকে! তবে, সেদিকে যাওয়ার পূর্বে ওকিঁনাওয়ায় মার্কিন সামরিক শক্তির আকার সম্পর্কে সামান্য ধারণা নেওয়া যাক।

ওকিঁনাওয়ার রাজধানীর নাম হলো নাহাঁশি। পূর্ব চীন সাগর আর ফিলিপাইন সাগরের মাঝে লম্বা রেখার আকার নিয়ে থাকা ওকিঁনাওয়া দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যার অবস্থান। দ্বীপের একেবারে নিচের দিকে অবস্থিত আলোচ্য শহর হতে আইল্যাণ্ডের যত ভেতরের দিকে যাওয়া হবে, মার্কিন সামরিক ঘাঁটির পরিমাণ সেখানে শুধু বৃদ্ধিই পেতে থাকবে। জাপানের ভূখণ্ডের মাঝে স্রেফ ওকিঁনাওয়া আইল্যাণ্ডের মাটিতে সবমিলিয়ে ৩২টি মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। যেসব ঘাঁটি সম্মিলিতভাবে দখল করে রেখেছে দ্বীপটির ১৮ শতাংশ ভূমি। আলোচ্য ৩২টি ঘাঁটির মাঝে মোতায়েন থাকা মার্কিন সামরিক বাহিনীর সর্বমোট পার্সোনেলের সংখ্যা যেখানে কমপক্ষে ৩০ হাজার।

ফিরে আসছি নাহাঁশির মার্কিন টহলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে জাপান আচমকা পরাজয় স্বীকার করে সারেণ্ডার করে নেওয়ার পর ‘৪৫ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনী ওকিঁনাওয়ার মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে বসে। তখন বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী শক্তি U.S. ArmyU.S. Navy এর পার্সোনেলদের মনোরঞ্জন করার জন্য সেখানে মার্কিন সামরিক বাহিনী নিজেদের তত্বাবধানে জাপানিজ ও ওকিঁনাওয়ান মেয়েদের দ্বারা পতিতালয় চালু করে। আলোচ্য সংস্কৃতি তারপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধের মাঝ দিয়ে গত দশক নাগাদ চলমান ছিল। সেসময় জাপানের Lighthouse Center for Human Trafficking Victims দ্বীপটির মাঝে এমন নারী পাচার চক্রেরও সন্ধান পেয়েছে, যারা কিনা ওকিঁনাওয়ার মার্কিন ঘাঁটিতে মোতায়েন সৈনিক ও কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জন করার জন্য বাহিরের দেশ থেকে মেয়েদের ওখানে ধরে নিয়ে যেতো। তবে, বর্তমানে সম্পূর্ণ বিষয়টি অনেকখানি সীমিত হয়ে গিয়েছে।

আর এই সীমিতকরণ আমাদের নিয়ে আসে বর্তমান সময়ে। বিগত কয়েকটি বছর ধরে ওকিঁনাওয়ায় মার্কিন সেনাসদস্যদের হাতে জাপানি মেয়েদের অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার মতো কর্মকাণ্ড মারাত্মক আকারে বেড়ে যেতে শুরু করে। ফলাফল হিসাবে জাপানের সাধারণ মানুষ ক্রমেই টোকিওর সরকার ও দ্বীপের মার্কিন সামরিক বাহিনীর ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে যেতে থাকে। কিন্তু, U.S. Department of War এসব চাপের মুখে পড়ার পর বহু চেষ্টার পরেও নিজ পার্সোনেলদের সামাল দিতে পারছিল না। সুতরাং, উপায়ন্তর না দেখে গত এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে ওকিঁনাওয়া পুলিশের সাথে Military Police (MP) দ্বারা আইল্যাণ্ডের বিভিন্ন অংশে মার্কিন সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথম সম্মিলিত টহল শুরু করা হয়। তারপর সেখান হতে চলতি নভেম্বর মাসের ০১ তারিখে যে টহল Solo Patrol এ রূপান্তর লাভ করেছে।

তবে, জাপানের সাধারণ মানুষ মার্কিন সেনাদের হাতে জাপানি নারীদের ধর্ষণ ও তার প্রতিক্রিয়ায় জাপানের মাটিতে মার্কিন মিলিটারি পুলিশের সশস্ত্র টহল, কোনোটাই ভালোভাবে নিচ্ছে না। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে যা চীনের জন্য সুসংবাদ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ধন্যবাদ।

ফেসবুক পোস্ট

Hi, I’m Revan M

self-proclaimed defence analyst. tracking conflict in SA, MENA & Eastern Europe. Muslim. Fairbanks, Alaska

Leave a Reply