বিবিধ

মানুষ তাই পায় যা তার তকদীরে রিযিক হিসেবে নির্ধারিত।

মানুষ তাই পায় যা তার তকদীরে রিযিক হিসেবে নির্ধারিত।

দুইটি ঘটনা –

সকাল সকাল মাছের বাজারে গেলাম মাছ কিনতে। তখনো সব মাছওয়ালা এসে পৌছেনি। যারা আসছে তাদের মধ্যে একজনের কাছে বেশ বড় কিছু পাংগাস মাছ দেখে এগিয়ে গেলাম। মাছওয়ালা বলতে শুরু করল,”একদম তাজা মাছ স্যার, ভোরবেলা ঘের থেকে তুলছি, খুব ভাল মাছ”। তো তার কথায় ইম্প্রেসড হয়ে নিলাম একটা মাছ। এবং যথারীতি বেশি দাম দিয়ে। কারন তখন প্রথম বাজার শুরু। বাসায় এসে গিন্নি মাছটা যেই কাটছে মাঝবরাবর অমনি পচা গন্ধে বমি আসার জোগাড়। ভিতরে নাড়িভুড়ি কমপ্লীটলি রটেড। খাওয়ার একেবারেই অনুপযুক্ত। বুঝাই যাচ্ছে গতকালের ধরা মাছ পানিতে জাবিয়ে রাখছিল রাতে মরে পানির মধ্যে পচে গেছে। এ ছাড়া এত সকালে মাছ পচার প্রশ্নই ওঠেনা। এবং এটা মাছওয়ালা জানত। একারনেই এত সুন্দর করে মাছের প্রশংসা করে গুছিয়ে দিছে। মাছ ফেরত দিতে গেলাম। প্রথমে অস্বীকার করছে, পরে অপরাধী চেহারায় স্বীকার করছে।

দাব্বাস খেজুরের এক কেজির প্যাকেট সরাসরি দুবাই থেকে প্যাকেট হয়ে আসে। প্রিমিয়াম কোয়ালিটি। দাম ও বেশি। বরাবরের মত খেজুরের দোকানে গিয়ে চাইলাম। দোকানদার দিল। ব্যস্ততায় বেশি খেয়াল করিনি। বাসায় এসে খুলে দেখি সেম প্যাকেটে অতি নিম্নমানের খেজুর ভরে হাতে পলি করে আমাকে দিছে। খেজুর ভেজা এবং গলে যাওয়ার অবস্থা। এটা ঐ দোকানদার নিজে হাতে করছে যেটা খেজুর ফেরত দিতে গিয়ে বুঝলাম। অপরাধী চেহারায় স্বীকার করছে।

উপরিউক্ত দুইজনের কাছেই আমার এটাই প্রথম পন্য ক্রয় করা এবং এটাই ইনশাআল্লাহ শেষ। অথচ গত ১০+ বছর ধরে একজন ব্যক্তির দোকান থেকেই কাচা-তরকারী কিনছি। একটা দিনের জন্যেও কোনদিন বেগুনটা পোকা বা আলুটা পচা আসেনি। অথচ তার কাছে কেনার সময় মালের দিকে তাকাই ই না। সেই নিজে হাতে সব সময় বেছে দেয়।

সবাই রিযিক উপার্জন করছে। কারোটা হালাল, কারোটা হারাম। যে ব্যক্তি হারাম উপার্জন করছে সে যদি হালাল পথে যেত তবুও ঐ পরিমান ই পেতো যে পরিমান হারাম পথে পাচ্ছে।

শেষ করছি একটি ঘটনা দিয়ে-

হযরর আলী (রাঃ) একবার দামেশকের এক মসজিদে নামাজ পড়তে ঢুকলেন। ঢোকার আগে রাস্তায় এক বালককে ডেকে তার ঘোড়াটা দেখে রাখতে বলে গেলেন। মনে মনে ভাবলেন নামাজ পড়ে বের হয়ে বালকে একটি দিরহাম বকশিশ দেবেন। কিছুক্ষন পর নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখলেন বালকটি নেই। খেয়াল করলেন তার ঘোড়ার পিঠের জীনটাও* নেই। সাহাবীর বুঝতে বাকি রইলনা, বালকটি তার ঘোড়ার জীন চুরি করে পালিয়েছে। পাশের একজনকে ডাকলেন এবং তার হাতে সেই এক দিরহাম দিয়ে বললেন, যাও বাজার থেকে আমার জন্য একটি জিন কিনে নিয়ে আসো। যখন লোকটা জীন কিনে ফেরত আসল, আলী (রাঃ) দেখলেন, আরে! এতো আমার সেই জীন। তুমি এটা কোথায় পেলে?” লোকটি বলল, “বাজারে দেখলাম একটি বালক এই জীনটি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে আছে। তার কাছ থেকে এক দিরহামের বিনিময়ে কিনে আনছি।”

আলী (রাঃ) আফসোস করে বললেন,”হায়! এই দিরহামটাই তাকে আমি হালাল ভাবে দিতে চেয়েছিলাম, সে সেটাকে হারাম করে নিল।”

Hi, I’m মেহেদী জামান

Leave a Reply