এসো সভ্যতা শিখি। পাঠ-১
১৫০০ সালের দিকে পশ্চিম ইউরোপীয়রা বিশ্বাস করত যে গোসল করা একটি অস্বাস্থ্যকর বিষয়।
ফ্রান্সের রাজা লুই-১৪ এবং স্পেনের রানি ইসাবেলা জীবনে মাত্র দুইবার গোসল করেন। যেদিন জন্ম হয় এবং যেদিন বিয়ে হয়।
১৭০০ সালের ব্রিটিশ রাজা জেমস-১ কে কখনোই গোসল করতে দেখা যায়নি। যার ফলে তার মাথায় সারাক্ষণ উকুনে ভরা থাকত।
মধ্যযুগে প্রায় ১০০০ বছর ধরে পশ্চিম ইউরোপীয়রা গোসলের বিষয়টি প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। এমনকি তারা সাঁতার কাটতেও পারত না। ফরাসি ইতিহাসবিদ জুলেস মিসলেট ইউরোপের মধ্যযুগকে ‘গোসল ছাড়া ১০০০ বছর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউরোপীয়দের মনে ধারণা ছিল, গোসল করলে লোমকূপের মধ্যে দিয়ে দেহে রোগ-জীবাণু প্রবেশ করে এবং সেই কারণে তারা গোসল করত না।
ফরাসিদের এই গোসল না করার আলসেমির কারণেই জন্ম নেয় শত শত বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি সুগন্ধি কোম্পানি। যাতে সুগন্ধি মেখে হলেও গোসল না করে গায়ের দুর্গন্ধ ঢাকা যায়!
তো এই হল আধুনিক সভ্য ইউরোপীয়দের প্রাচীন ইতিহাস। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও তাদের প্রাচীন অনেক রীতিনীতির আভাস পাওয়া যায়। মাত্র বছর দশেক আগেও নিজ চোখে এক ইউরোশিয় দেশে দেখেছি টয়লেটে কোন পানির ব্যবস্থা নেই। শুধু টিস্যু দিয়েই কর্ম সমাধা করে চলে যায়।
এই ইউরোপীয় এবং পশ্চিমারাই আজকে আমাদের শেখায় ‘কিভাবে জীবন-যাপন করতে হয়’। খাওয়া-পরা-ওঠা-বসা ইত্যাদি সবকিছুতেই তারা আমাদের স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করে দেয়।
অন্ধ আমরা, আমি। আজকে বুঝতেই পারছিনা যে, ওই সাদা চামড়া, নীল চোখ আর সোনালী চুল মানেই সভ্যতা নয়। ওরা সভ্য নয়, ওরা নিদারুন অসভ্য।