তিনিই হলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
একবার একজন নারী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে খুব সুন্দর একটি চাদর উপহার দেন। ঝালরসহ চাদর। এতো সুন্দর চাদর নবিজী আগে কখনো পরেননি।
নবিজী এমনভাবে চাদরটি গ্রহণ করলেন, যেন চাদরটি তাঁর খুব প্রয়োজন। তৃষ্ণার্ত কাউকে এক গ্লাস পানি দিলে যেমন আগ্রহ নিয়ে গ্লাসটি হাতে নেয়, নবিজীও তেমনভাবে চাদরটি গ্রহণ করেন।
তিনি চাদরটি পরলেন। তাঁকে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছিলো। সাহাবীরা মুগ্ধতা নিয়ে তাকে দেখছিলেন।
চিন্তা করুন, আপনার চাচা ইংল্যান্ড থেকে দেশে এসেছেন। আপনাকে একটি আইফোন দিয়েছেন। আইফোন নিয়ে হাঁটছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে আপনার বন্ধু বললো, “দোস্ত, তোর মোবাইলটা এতো ভালো লাগছে, এটা আমাকে দিয়ে দেয় প্লিজ।”
আপনার তখন কেমন লাগবে?
আপনি ঈদের কাপড় কিনে বাড়ি ফিরলেন। চাচাতো ভাই বললো, “ভাইয়া, পাঞ্জাবিটা অন্নেক সুন্দর। আমাকে দিয়ে দাও। তুমি আরেকটাই কিনো।”
আপনার তখন কেমন লাগবে?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে প্রথমবারের মতো এতো সুন্দর একটি চাদর গায়ে দেন, ঠিক সেই মুহূর্তে একজন সাহাবী বলে উঠেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! চাদরটি অনেক সুন্দর। চাদরটি আমাকে দিয়ে দিন!”
কয়েক সেকেন্ড আগে সাহাবীরা মুগ্ধ হয়ে নবিজীকে দেখছিলেন, এখন তাদের চোখ চলে গেলো সেই সাহাবীর দিকে। কেউ কেউ রাগী চেহারায় তার দিকে তাকালেন।
সাহাবী কিভাবে এমন দাবি করলেন?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাগ করলেন না, সাহাবীকে ধিক্কার জানালেন না, মন খারাপ করলেন না। তিনি শুধু বললেন, “দেবো।”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীকে চাদরটি দিয়ে দিলেন।
তিনি তাঁর ঘরে যাবার পর এবার বাকি সাহাবীরা ঐ সাহাবীকে ধরলেন। কেউ ধমক দিলেন, কেউ ধিক্কার জানালেন, “তুমি কাজটি ঠিক করো নি। তুমি দেখলেই যে, চাদরটি তাঁর প্রয়োজন। এটা চাইতে গেলে কেনো? তুমি জানোই তো, কেউ তার কাছে কিছু চাইলে তিনি ‘না’ করেন না!”
সাহাবী বললেন, “এই চাদরটি বরকত লাভের জন্য চেয়েছি। যাতে এই চাদরে আমাকে দাফন করা হয়।”
তিনিই হলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। শখের একটি জামা পরলেন, আরেকজন চাওয়া মাত্র সেই জামা খুলে তাকে পরিয়ে দিলেন।
আল্লাহুম্মা ছল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিআনা মুহাম্মদ।
সহীহ বুখারী: ৬০৩৬।